Header Ads

অপরাজনীতির বিণাশী গ্রাস থেকে উদ্ধার ও মুক্তির একমাত্র পথ মানবতার রাজনীতি ২। - ইমাম হায়াত


অপরাজনীতির বিণাশী গ্রাস থেকে উদ্ধার ও মুক্তির একমাত্র পথ মানবতার রাজনীতি।
▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄
▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄
রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থার নীতি আদর্শ, রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ত্ব ও সরকারী ক্ষমতার রূপরেখা এবং জীবন ও রাষ্ট্রের সম্পর্কই রাজনীতি। রাজনীতিই রাষ্ট্র ও বিশ্বের পরিচালন ব্যবস্থা। মানুষ রাষ্ট্রের অর্ন্তগত এবং মানুষের জীবন রাষ্ট্রব্যবস্থা বিশ্বব্যবস্থার মধ্যে প্রত্যক্ষ জড়িত নিমজ্জিত। প্রাকৃতিক শক্তি ও ব্যবস্থার পর রাজনীতিই জীবন ও দুনিয়ার প্রধান নিয়ামক শক্তি ও সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপক কর্তৃত্ত্ব। মানুষ নির্দলীয় হতে পারে কিন্তু রাষ্ট্রীয় প্রভাব তথা রাজনীতির ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া প্রতিফল প্রতিবেশ থেকে মুক্ত থাকতে পারে না। প্রত্যক্ষ ভাবেই দুনিয়ার সব মানুষ ভাল বা মন্দ যে কোন রাজনীতির শিকার। রাজনীতির মাধ্যমেই রাষ্ট্র গঠন হয়, রাষ্ট্রীয় নাগরিকত্ত্ব রাজনীতিরই প্রতিফল। রাষ্ট্র ও বিশ্বেরও মূল বিষয় মানুষের জীবন। মানুষের জীবন এবং রাষ্ট্র ও বিশ্বব্যবস্থা অবিচ্ছিন্ন, ফলে রাজনীতি এবং মানুষের জীবনও অবিচ্ছিন্ন বিষয়।
রাজনীতি জীবনের অতি জরূরী অতি গুরুত্ত্বপূর্ণ ও অতি প্রভাব বিস্তারকারী অপরিহার্য্য বিষয়। দুনিয়ার অন্যান্য অনেক বিষয়ের মত রাজনীতিও মুলতঃ দুই প্রকার, ভাল ও মন্দ, সু-রাজনীতি ও কু-রাজনীতি, কল্যাণ ও অকল্যাণের রাজনীতি, মানবতা ও পাশবতার রাজনীতি, ন্যায় ও অন্যায়ের রাজনীতি, সার্বজনীন রাজনীতি ও গোষ্ঠিস্বার্থের গোষ্ঠিবাদী রাজনীতি, স্বাধীনতা-অধিকার-প্রগতি তথা জীবন বিকাশের রাজনীতি ও স্বৈরতা-দস্যুতা-নিপীড়ন-রূদ্ধতার রাজনীতি, এভাবে রাজনীতিরও দুই রূপ দুই ধারা রয়েছে। সু ও কু যে ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে সে ধারার রাষ্ট্র ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং বিশ্ব ও বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে উঠবে এবং মানুষ সবাইকে তদনূরূপ প্রতিফল ভোগ করতে হবে। একক গোষ্ঠির রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের মাধমে কখনও কোন অবস্থায় সার্বজনীন মানবিক রাষ্ট্র বা সব মানুষের স্বাধীনতা অধিকার বিকাশের রাষ্ট্র ও বিশ্ব গড়ে উঠতে পারে না বরং বিপরীত অবস্থা তৈরী হয়।
আজকের দেশ ও দুনিয়ায় আমরা যে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির শিকার, জীবনের যে দুঃসহ ভয়াবহ বিপর্যয়, মানবতার যে চরম সংকট, সর্বত্র খুন-গুম-রক্তপাত, নির্যাতন-নিপীড়ন-দস্যুতা অন্যায় আধিপত্য- স্বৈরতা-বর্বরতা-পাশবতা-সন্ত্রাস, লুট-শোষণ-দরিদ্র
তা-নিরাপত্তাহীনতা-আতংক-অধিকারহ
ীনতা-বাকরূদ্ধতা, সত্য ও জ্ঞানের প্রবাহে মারাত্মক বাধা, চতুর্দিকে বিকৃত রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের নামে দানবীয় স্বৈর অপশক্তির প্রাদূর্ভাব সব ধ্বংসলীলার মূলে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার অপরাজনীতি। এ অপরাজনীতির পিছনে রয়েছে মানবতা ধ্বংসাত্মক বিভিন্ন মতবাদের গোষ্ঠিবাদী কর্তৃত্ত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে নেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত অপশক্তি। যারা নিজেরা ব্যতীত সব মানুষের জীবন ও জীবনের অধিকার অস্বীকার করে, যারা রাষ্ট্র ও বিশ্বে অন্য সব মানুষের অধিকার হরণ ও সব মানুুষের মালিকানা অস্বীকার করে শক্তির জোরে বলপূর্বক নিপীড়নের মাধ্যমে সবাইকে উৎখাত ধ্বংস করে কেবল নিজেদের অন্যায় প্রভূত্ত্ব মালিকানা কর্তৃত্ত্ব কায়েম করে রাখতে চায়। এ সব গোষ্ঠিবাদী রাজনীতি কখনও ধর্মের পবিত্র নাম ব্যবহার করে, কখনও জাতীয়তাবাদ, কখনও ভাষা, কখনও শ্রেণী, পেশা, গোত্র, বর্ণ বিভিন্ন ধারায় রাষ্ট্রের সার্বজনীনতা ধ্বংসের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করে জীবন ও মানবতা ধ্বংসে লিপ্ত হয়।
ধর্ম-দর্শন-মতবাদ-জীবন চেতনা-জাতীয়তা সবার এক নয়। গোত্র-ভাষা-সংস্কৃতি সবার এক নয়। কিন্তু মৌলিকভাবে প্রকৃতিক ভাবে সবাই মানুষ, মানবস্বত্ত্বাই সব মানুষের প্রাথমিক স্বত্ত্বা ও পরিচয় যা অস্বীকার করা জীবনই অস্বীকার এবং যা ধ্বংস করা জীবনকেই ধ্বংস করা। জীবন তথা মানবস্বত্ত্বা স্বীকার করলে জীবনের মালিকানা অধিকার অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। জীবনের মালিকানা অধিকার স্বীকার করলে প্রত্যেক মানুষকে তার বিশ্বাস আদর্শ নিয়ে স্বাধীনভাবে সত্য ও জ্ঞানের সন্ধানে বিকশিত হওয়ার অধিকার এবং রাষ্ট্র ও দুনিয়ার উপর তার মালিকানা অধিকার অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। অর্থাৎ প্রত্যেক মানুষ তার নিজ জীবনের মালিক এবং সম্মিলিত ভাবে সারা দুনিয়ার অংশিদার মালিক, যে মালিকানা জীবন ও দুনিয়ার স্রষ্টা ও মূল মালিক দয়াময় আল্লাহতাআলা প্রদত্ত্ব মালিকানা ও তাঁর মহান রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম প্রদত্ত্ব ও নির্ধারিত মালিকানা। এ মালিকানা অস্বীকার জীবনই অস্বীকার, জীবনের সত্যই অস্বীকার। জীবনের সত্য স্বীকার করলে এ সত্য অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে কোন রাষ্ট্র তথা দুনিয়া কোন একক গোষ্ঠির নয়, সব মানুষের।
প্রত্যেক মানুষের জীবন ও দুনিয়ার এ মালিকানা প্রকৃতপক্ষে দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর মহান রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম প্রদত্ত্ব ও সুস্পষ্টভাবে ঘোষিত আমানত যাহা লংঘন প্রকৃতপক্ষে দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর মহান রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লামের প্রাকৃতিক অলংঘনিয় দান অস্বীকার, পবিত্র কলেমার জীবন চেতনা ও মর্মধারা অস্বীকার। সব প্রকৃত ধর্মই সব মানুষের অধিকার ঘোষনা করেছে এবং একক ধর্মের নামে রাষ্ট্র কোন ধর্মেরই শিক্ষা নয় বরং ধর্মের পবিত্র নামের অসৎ অপব্যবহার। ইসলাম অবশ্যই পূর্ণাংগ এবং ইসলামের রাজনৈতিক দিকদর্শন খেলাফতে ইনসানিয়াত বা সর্বজনীন মানবতার রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থা। ইসলামের সরাসরি নামে বা কোন একক গোষ্ঠির নামে রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দল ইসলামের প্রকৃত ধারা আহলে ছুন্নাতের বিপরীত খারেজী সালাফী ওহাবী শিয়া ইত্যাদি বাতেল ফেরকার বিকৃত অপরাজনীতি যাহা ইসলামের প্রকৃত দিকদর্শনের বিপরীত, রাষ্ট্র ক্ষমতার বলে জোরপূর্বক নিজেদের ভ্রান্ত মতবাদ চাপিয়ে প্রকৃত ইসলামকে উৎখাতের চক্রান্ত, ইসলামের পবিত্র নামের কর্তৃত্ত্ব ছিনিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা যার ফলে তাদের সকল অন্যায়, নৃশংসতা, স্বৈরতা, বিভৎসতা, পাপাচার, অবিচার, কলংকের দায় ইসলামের পবিত্র নামে চালিয়ে দেয়া যায়।
সব মানুষের রাষ্ট্র সবার রাষ্ট্র সার্বজনীন মানবতার রাষ্ট্র ও দুনিয়া প্রতিষ্ঠার জন্য সব মানুষের মালিকানা অধিকার বিকাশের রাজনীতি অপরিহার্য। একক গোষ্ঠির হীনস্বার্থে সংকীর্ণ গোষ্ঠিবাদী রাজনীতি গোষ্ঠি স্বার্থের পাশবিক রাষ্ট্র তৈরি করে অন্য সবাইকে অস্বীকার করে উৎখাত করে বলপূর্বক অন্য সবার বিশ্বাস আদর্শ রূদ্ধ নিষিদ্ধ করে ক্ষমতার বলে নিপীড়নের মাধ্যমে নিজেদের সব কিছু চাপিয়ে দিয়ে জীবন রূদ্ধ করে মানবতা ধ্বংস করে। গোষ্ঠিবাদী রাজনীতি ও দস্যুতার মধ্যে শব্দ ছাড়া কোন প্রভেদ নেই। গোষ্ঠিবাদী গোষ্ঠি স্বার্থের রাজনীতি যারা রাষ্ট্রকে কেবল তাদের নিজেদের একক গোষ্ঠিগত মনে করে এবং অন্যদের অস্বীকার করে জীবন ও মানবতা অস্বীকার করে যা আসলে কোন রাজনীতিই নয়, রাজনীতির নামে স্বৈর দস্যুতা মাত্র। দশ জনের সম্পদ একজনের নামে করে ফেলা যেমন দস্যুতা তেমনি কারো বিশ্বাস ও ইচ্ছা বিরূদ্ধ কিছু বল পূর্বক চাপিয়ে দেয়া বা ছিনিয়ে নেয়াও দস্যুতা মাত্র। এ স্বৈর দস্যুতার রাজনীতিই আজ দুনিয়ায় মানবতার বিপর্যয় ধ্বংসলীলা রক্ত বন্যার প্রধান কারণ, যা থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত কখনও মানবতা উদ্ধার নিরাপদ ও মুক্ত হবে না, মানবতার রাষ্ট্র ও মানবিক দুনিয়া তৈরি হবে না।
দুনিয়ায় আজ মানবতা বিণাশী একক গোষ্ঠিবাদী সব অপরাজনীতিই আছে, নেই শুধু মানবতার রাজনীতি। সব মানুষের কল্যাণ ও শান্তির রাজনীতি। আমরা যারা যে কোন ধর্ম-জাতীয়তা-জীবন চেতনা- মতপথের অনুসারীই হই, যারা নিজেদের ধর্মকে ভালবাসি, শ্রদ্ধা করি ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করি এবং যার যার আত্ম পরিচয়, জীবন চেতনা ও জাতীয়তার যে ভিত্তিই গ্রহন করি না কেন, কিন্তু রাষ্ট্র একক ধর্ম, একক জাতি, একক শ্রেণী, একক গোত্রের নামে গোষ্ঠি স্বার্থ ভিত্তিক হয়ে সব মানুষের জীবন অস্বীকার ও অধিকার হরণ বিশ্বাস করি না, তথা রাষ্ট্র ও দুনিয়া সবার সব মানুষের বিশ্বাস করি এবং বিশ্বাস করি যে, মানুষ মানবস্বত্ত্বা বস্তুর উর্ধে, বস্তু মানুষের জন্য, মানুষ বস্তুর জন্য নয়, রাষ্ট্র ও বিশ্বও মানুষের জন্য সব মানুষের কল্যানের জন্য তাদেরকে অবশ্যই দুনিয়ার সর্বত্র মানবতার রাজনীতি গড়ে তুলতে হবে, মানবতা বিধ্বংসী অপরাজনীতি থেকে সবাইকে সচেতন উদ্ধার ও মুক্ত করতে হবে এবং মানবতার রাজনীতি ভিত্তিক রাজনৈতিক দল গড়ে তুলতে হবে। না হয় অপরাজনীতির অপশক্তির পরাধীনতা ও ধ্বংসলীলা থেকে আমাদের জীবন ও দুনিয়া কখনও মুক্ত হবে না।
মানব জীবন বুঝা, মানবস্বত্ত্বা ও এর অধিকার ও ব্যাপ্তি উপলদ্ধি করা, জীবন ও রাষ্ট্রের সম্পর্ক বুঝতে পারা, রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্য ও জীবনের উপর রাষ্ট্র ব্যবস্থার ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বুঝতে পারা ব্যতীত মানবতার রাজনীতি ও মানবতা বিণাশী অপরাজনীতির পার্থক্য উপলদ্ধি করা যাবে না। সবার হক একক গোষ্ঠির করে ফেলা, সবাইকে অস্বীকার করে বলপূর্বক নিজেদের একক গোষ্ঠিগত প্রভূত্ত্ব চাপিয়ে দেয়া রাজনীতি নয় অপরাজনীতি এবং অন্যায় ও অপরাধ। এ অন্যায় অপরাধ দস্যুতার অপরাজনীতির হিংসা বিদ্বেষ হিংস্রতার ভয়াল আগ্রাসনে সভ্যতা-মানবতা-স্বাধীনতা-নিরাপত্তা-অধিকার-জ্ঞান প্রবাহ আজ বিধ্বংস এবং দুনিয়া এক কারাগার কষাইখানায় পরিনত হয়েছে।
দেশ ও দুনিয়ায় সব মানুষের শান্তি-নিরাপত্তা-মর্যাদা-স্বাধীনতা ও বিকাশের জন্য, সব ধর্ম-দর্শন- মতপথ-জীবন চেতনা-জাতীয়তা সবার অবাদ গতি বিকাশ রক্ষার জন্য, সব হিং¯্রতা-পাশবতা-বর্বরতা- অরাজকতা-ধ্বংসলীলা স্বৈরদস্যুতা থেকে সবার মুক্ত জীবনের জন্য মুক্ত রাষ্ট্র ও মুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। মানবতার রাজনীতি ও মানবতার রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে সব মানুষের রাষ্ট্র ও সব মানুষের দুনিয়া হলেই কেবল মুক্ত রাষ্ট্র ও মুক্ত বিশ্ব গড়ে উঠবে, না হয় মুক্ত জীবন, মুক্ত রাষ্ট্র ও মুক্ত বিশ্ব গড়ে উঠবে না। মুক্ত রাষ্ট্র ও বিশ্বই কেবল মানবতার রাষ্ট্র ও বিশ্ব হতে পারে যেখানে বিশ্বাসগত ভাবে, আদর্শগত ভাবে ও অর্থনৈতিক ভাবে সব মানুষ তার জন্য দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর মহান রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম প্রদত্ত প্রাকৃতিক অধিকার ফিরে পাবে।
জীবন বুঝলে, জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুঝলে এবং প্রকৃত ধর্ম ও ধর্মের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুুঝলে, সত্য ও মিথ্যা, পূণ্য ও পাপ, ন্যায় ও অন্যায়, অধিকার ও অনধিকার, স্বাধীনতা ও পরাধীনতা, মালিকানা ও দাসত্ত্ব, প্রতিনিধিত্ত্ব ও স্বৈরতা পার্থক্য করতে পারলে মানবতার মুক্তির রাজনীতি ও বিভিন্ন নামে প্রচলিত বিষাক্ত অপরাজনীতি পার্থক্য করা যাবে, না হয় যাবে না। অনেকে ধর্ম-জাতীয়তা-মতবাদ-গোত্র-ভাষা-সংস্কৃতি ও রাষ্ট্র একাকার গুলিয়ে ফেলেন। ধর্ম-জাতি-মতবাদ-শ্রেণী-পেশা সব ভিত্তিতে দল অবশ্যই হতে পারে কিন্তু রাজনৈতিক দল হতে পারে না। ধর্মের মূল্যবোধ রাজনীতি ও রাষ্ট্রের অবশ্যই ভিত্তি হতে পারে হওয়া অপরিহার্য, ধর্মের মূল্যবোধ ব্যতীত সত্য-মিথ্যা, পাপ-পূণ্য, ন্যায়-অন্যায় বোধ লুপ্ত হয়ে মানবতা বিলুপ্ত হয়ে যাবে, কিন্তু একক ধর্মের নামে রাষ্ট্র ধর্ম বিরোধী ও ধর্মের জন্য ধ্বংসাত্মক। একইভাবে একক জাতীয়তা একক গোত্র একক মতবাদ সংখ্যা বা ক্ষমতার বলে সংবিধানে লিখে সবার উপর চাপিয়ে দিলে তা অন্য সবার আত্মা ও জীবনের উপর চরম জুুলুম এবং কৃত্রিম প্রতিষ্ঠা যার প্রকৃত গ্রহনযোগ্যতা ও হৃদয়গত ভিত্তি থাকে না, অন্যায়, অবৈধ ও অনৈতিক ভাবে ক্ষমতার জোরে বলবৎ থাকে।
একক ধর্ম-জাতি-শ্রেণী ভিত্তিক দলকে রাজনৈতিক দল গন্য করা হলে রাষ্ট্র আর সবার থাকে না, সবার জীবন অস্বীকার হয়, মানব জীবন অস্বীকার হয়, ধর্মের মূল্যবোধ পবিত্র কলেমার চেতনাও নস্যাৎ হয়, গোষ্ঠিগত ফেরাউনী কায়েম হয়। তাই রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল হতে হবে কেবল সব মানুষের স্বার্থ অধিকার মালিকানা ও কল্যাণ ভিত্তিক, সবার জীবন ভিত্তিক, কোন একক গোষ্ঠিগত নয়, তথা কেবল মাত্র মানবতা ভিত্তিক, কারণ সৃষ্টগত প্রাকৃতিকভাবেই দুনিয়া সব মানুষের, কোন একক গোষ্ঠির নয়। দয়াময় আল্লাহতাআলা তাঁর প্রিয়তম মহান রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লামকে সবার সব মানুষের কল্যাণ-স্বাধীনতা- নিরাপত্তা-অধিকার ও মুক্তির উৎস রাহমাতাল্লিল আলামিন নামে ঘোষনা করে সবার জীবন ও অধিকার ঘোষনা করেছেন।
রাষ্ট্রকে একক মতবাদ ভিত্তিক একক গোষ্ঠিগত করে ফেলার স্বৈরদস্যুতা মূলক অপরাজনীতি শুধু সংঘাত হিংস্রতা ও অরাজকতাই তৈরি করে না মানুষের আত্মাকেও কলুষিত করে, মানবিক ভ্রাতৃত্ত্ব ও সংহতি বিনষ্ট করে, বস্তুবাদী জীবন চেতনায় আচ্ছন্ন করে মানবস্বত্ত্বাও ধ্বংস করে, মানুষকে পরস্পরের শত্রু এবং পাশবিক করে তোলে, ধর্মীয় ও মানবিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে। একমাত্র মানবতার রাজনীতিই মানব স্বত্ত্বাকে সুরক্ষিত ও বিকশিত করে মানবতার রাষ্ট্র সব মানুষের সার্বজনীন কল্যাণের রাষ্ট্র গড়ে তুলতে পারে, সব মানুষের স্বাধীনতা অধিকার নিরাপত্তা বিকাশ নিশ্চিত করতে পারে। সব মানুষের স্বাধীনতা অধিকার বিকাশের মধ্যে সব ধর্ম সব দর্শন সব জাতীয়তা সবার জীবন চেতনা সবার বিকাশ ও সুরক্ষা নিহিত যেখানে কেউ ক্ষমতার জোরে অন্য কাউকে দমন উৎখাত রূদ্ধ বা খুন করতে পারবে না, সত্য ও জ্ঞানের মুক্ত প্রবাহ থাকবে, যেখানে মানুষ নিজের যথার্থ প্রাপ্য অর্জন ও মুক্তির পথ বেছে নেয়ার এবং আবদ্ধ আঁধার থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ লাভ করবে, নিজের জীবনের লক্ষ্য ও গন্তব্যে পৌছাতে পারবে।
গোষ্ঠিবাদী দস্যুভিত্তিক মানবতা বিরোধী এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থী অপরাজনীতির কারণে দেশ ও দুনিয়ায় বিরাজমান অসহনীয় বিবেক বর্জিত অন্যায় দস্যুতা ধ্বংসযজ্ঞ উৎখাত সন্ত্রাস খুন যুদ্ধ মারনাস্র ও মানবতার হিংস্রাত্মক বিভাজন বৈষম্য থেকে সবার জীবন, ধর্ম, দেশ ও সমগ্র মানবতা রক্ষায়, জীবন ও মানবতার পূনঃ প্রতিষ্ঠায় আসুন আমরা ধর্ম জাতি মতপথ নির্বিশেষে মানবতায় বিশ্বাসী তথা নিজের মালিকানা অধিকার স্বাধীনতার সাথে অন্য সবারও মালিকানা অধিকার স্বাধীনতায় সমগ্র মানবতার কল্যাণে বিশ্বাসী সব মানুষ সর্বত্র ইনসানিয়াত পার্টি বা মানবতা পার্টির সংগঠন ও শাখা গড়ে তুলে বিশ্ব ব্যাপী মানবতার মুক্তি সাধনার বিপ্লবী অভিযাত্রায় এগিয়ে যাই।
আমরা মানবতায় বিশ্বাসী তথা সব মানুষের সার্বজনীন রাষ্ট্র ও মুক্ত বিশ্বে বিশ্বাসী দুনিয়ার নিপীড়িত মানুষগণ সার্বজনীন মানবতার রাজনীতির রূপরেখায় সঠিক পথে সঠিক লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হলেই মানবতা ধ্বংসাত্মক অপশক্তির অপরাজনীতি দূর হয়ে যাবে এবং মুক্ত মানবতার শান্তিময় জ্ঞানময় নতুন বিশ্ব তৈরি হবে, যা ব্যতীত জীবন ও দুনিয়া কেবল মিথ্যা-মূর্খতা-জুলুম-খুন-সন্ত্রাস-বর্বরতা-স্বৈর-দস্যুতা পরাধীনতার আঁধারে বিণাশ হতে থাকবে। সূর্যোদয় ব্যতীত যেমন রাত পোহাবে না তেমনি মানবতার রাজনীতি ও মানবতার রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে মানবতার রাষ্ট্র ও মানবতার বিশ্ব ব্যতীত মানবতার উদ্ধার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তি কখনও আসবে না।
বিশ্ব ছুন্নী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও সার্বজনীন মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থার বিপ্লবী দিকদর্শন বিশ্ব ইনসানিয়াত পার্টির আহ্বায়ক, ইমাম হায়াত এর অনুমোদনক্রমে ইনসানিয়াত পার্টি, বাংলাদেশ Humanity Party, Bangladesh এর পক্ষে- অধ্যাপক ডঃ কাওছার আমীন, আল্লামা আরেফ সারতাজ, আবরার চিস্তি, সুফী মোর্শেদ শাহ, খাজা নাজমুদ্দিন, জাকির আহসান, রাহান রাহবার, এমদাদ সায়ীফ, মিজানুর রহমান, মফিজুর রহমান, শেখ নয়ীমুদ্দিন, ইলিয়াছ শাহ, আওয়াল কাদেরী, এডভোকেট নুসরাত নুহা ও ইঞ্জিঃ সামসুল হক।
মোবাইলঃ ০১৬১২১২৮৮৮৪, ০১৮১৯৬৪২৪৯৮, ০১৮১৭৭২৪৬৪৬, ০১৭১৭৫৫০৬৬৭।

1 comment:

Powered by Blogger.